ঢাকা ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

 ২৫০ বছরের প্রাচীন নিদর্শন শেরপুরের মাইসাহেবা মসজিদ

 ২৫০ বছরের প্রাচীন নিদর্শন শেরপুরের মাইসাহেবা মসজিদ

শেরপুর জেলায় অবস্থিত মাইসাহেবা জামে মসজিদ দেশের অন্যতম দৃষ্টিনন্দিত এবং বৃহৎ মসজিদগুলোর একটি। আনুমানিক ২৫০ বছর পূর্বে নির্মিত এই মসজিদটি শেরপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন। এটি শহরের কেন্দ্রস্থলে শেরপুর সরকারি কলেজের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে অবস্থিত। মসজিদটির নির্মাণশৈলীতে বক্রাকার খিলানের ব্যবহার, সুউচ্চ দুইটি মিনার এবং স্থাপত্য কলার আধুনিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।

মসজিদের নামকরণ নিয়ে একটি চমকপ্রদ ঘটনা প্রচলিত আছে। শেরপুরের তিনআনি জমিদার মুক্তাগাছার ষোল আনি জমিদারকে দাওয়াত দেন। মুক্তাগাছার জমিদার শেরপুরে এসে বিশ্রামের জন্য একটি স্থান চান। তখন তিনআনি জমিদার খাজনা আদায়ের ঘরের জায়গাটি তাকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু যখন ঘর ভাঙার জন্য হাতি পাঠানো হয়, হাতিটি ঘরের সামনে সালাম দিয়ে বসে পড়ে। খবর পেয়ে তিনআনি জমিদার এসে দেখেন, ঘরের ভেতর এক নারী ইবাদতে মগ্ন। ওই নারী ছিলেন মাইসাহেবা। তার প্রতি সম্মান জানিয়ে জমিদার ওই স্থানেই একটি মসজিদ নির্মাণ করেন এবং তার নামানুসারে মসজিদের নামকরণ করা হয়। মাইসাহেবার মৃত্যুর পর তার কবরও মসজিদের প্রাঙ্গণে রাখা হয়।

মাইসাহেবা জামে মসজিদটি ৩ তলা। নিচতলায় রয়েছে নামাজের ব্যবস্থা ও ওযুর ব্যবস্থা। দোতলা নামাজের ব্যবস্থা এবং ধর্মীয় পাঠাগার রয়েছে। বর্তমানে মূল মসজিদে ১০ হাজার মুসল্লী একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের প্রবেশ পথে দুইটি দৃষ্টি নন্দিত গেইট রয়েছে বড় গেইট এবং মসজিদের দুটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে,এখানে মহিলাদের নামাজের স্থান রয়েছে ও সমগ্র মসজিদ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করার কাজ চলছে। নিরাপত্তা জন্য রয়েছে সিসি ক্যামেরা। মাইসাহেবা মসজিদে বয়স্কদের বিনামূল্যে কোরআন শেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। অসংখ্য বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর ২ ঘণ্টা করে সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন ও তাজভিদ শেখেন।

মসজিদটি পাহারা দেওয়ার জন্য দু’জন লোক রয়েছেন। একজন মসজিদ কর্তৃপক্ষের অন্যজন পৌর কর্তৃপক্ষের। মসজিদসহ মসজিদ সংলগ্ন এলাকা সিসি ক্যামেরা দিয়ে নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রতি শুক্রবারে দূরদূরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসে এই মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে। অনেক দেশি-বিদেশি পর্যটক মাইসাহেবা জামে মসজিদ দর্শন করতে আসে প্রতিদিন।মাইসাহেবা মসজিদে বয়স্কদের বিনামূল্যে কোরআন শেখানোর ব্যবস্থা রয়েছে। অসংখ্য বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর ২ ঘণ্টা করে সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন ও তাজভিদ শেখেন।

মাইসাহেবা মসজিদে লোকজন প্রচুর দান করেন। এমনকি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও এখানে দান করেন নিয়মিত। দিনমজুর থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রী, ভিক্ষুকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এখানে দান করে তৃপ্তিবোধ করেন। বিশেষ করে এ রোডে চলাচলকারী পাবলিক পরিবহনের ড্রাইভাররা দিনের শুরু এবং শেষভাগে নিয়মিত দান করেন।এ মসজিদের নামে বিভিন্ন যানবাহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

আবা/সজল/সোহান

মাইসাহেবা মসজিদ,প্রাচীন নিদর্শন,শেরপুর
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত